নাইজেরিয়ার নাইজার রাজ্যের মোকওয়া শহরে ভয়াবহ বন্যায় অন্তত ১১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে ২০২৫ সালের ২৮ মে, যখন টানা ভারী বর্ষণের ফলে শহরের নিকটবর্তী একটি বাঁধ ভেঙে পড়ে। বাঁধ ভেঙে যাওয়ার ফলে বিশাল এলাকার ঘরবাড়ি পানির নিচে তলিয়ে যায় এবং কয়েক হাজার মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়ে।
স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, ইতোমধ্যে প্রায় ৩,০০০ ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়েছে এবং প্রায় ১,৫০০ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, যাদের মধ্যে কমপক্ষে ২০০ জন বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়েছেন। অনেকেই ঘুমন্ত অবস্থায় প্লাবিত হন, ফলে নিরাপদে সরে যাওয়ার সুযোগ পাননি। উদ্ধার কাজ চলমান থাকলেও এখনো বহু মানুষ নিখোঁজ রয়েছে।
মোকওয়া শহরটি উত্তর নাইজেরিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ কৃষিভিত্তিক বাণিজ্যকেন্দ্র। এই শহরের মাধ্যমে উত্তরাঞ্চলের কৃষিপণ্য দক্ষিণাঞ্চলে সরবরাহ করা হয়। বন্যার ফলে এই গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে এবং আর্থিকভাবে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে শহরবাসী।
আন্তর্জাতিক রেড ক্রস ও জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থাগুলো উদ্ধার ও সহায়তায় কাজ করছে। তবে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে পর্যাপ্ত অবকাঠামো না থাকায় কাজ দ্রুত এগিয়ে নিতে সমস্যা হচ্ছে।
উল্লেখযোগ্যভাবে, নাইজেরিয়া বর্তমানে জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়াবহ প্রভাবের মুখোমুখি। একদিকে দীর্ঘ খরা, অন্যদিকে হঠাৎ করে অতিবৃষ্টি—এই চরম আবহাওয়া পরিস্থিতি দেশের ৩০টিরও বেশি রাজ্যে বন্যার ঝুঁকি তৈরি করেছে।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, ২০২৫ সালের মধ্যেই আরও বৃহৎ পরিসরে বন্যা হতে পারে, যা ১,২০০-এর বেশি সম্প্রদায়কে প্রভাবিত করতে পারে। এজন্য জরুরি ভিত্তিতে বাঁধ, সেতু ও বন্যা পূর্বাভাস ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির আহ্বান জানানো হয়েছে।