আজ বৃহস্পতিবার (৯ জিলহজ) পবিত্র হজ। সেলাইবিহীন শুভ্র কাপড়ে আরাফাতের ময়দানে দাঁড়িয়ে ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’ ধ্বনিতে আজ মুখরিত হয়েছে মক্কার পবিত্র ভূমি। সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সারা বিশ্বের লাখ লাখ মুসলমান এ ময়দানে অবস্থান করছেন মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায়।
হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে ৮ জিলহজ বুধবার মিনায় মুসল্লিদের জড়ো হওয়ার মাধ্যমে। যদিও অধিকাংশ হজযাত্রী মঙ্গলবার রাতেই মিনার তাঁবুতে পৌঁছে যান। মিনায় অবস্থান, ইবাদত, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ এবং রাত যাপন করেন তাঁরা। বাংলাদেশের ৮৫ হাজার ১৬৪ জন হজযাত্রীসহ অন্যান্য দেশের হাজিরাও মিনার তাঁবুর শহরে কাটান দিনরাত। বাংলাদেশিদের সেবায় নিয়োজিত ছিল ১৮টি সরকারি টিম।
আজ (৯ জিলহজ) ভোর থেকেই মুসল্লিরা রওনা হয়েছেন হজের মূল কেন্দ্রবিন্দু আরাফাতের ময়দানের উদ্দেশে। মিনার প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই বিশাল সমতল মাঠ তিনদিক থেকে পাহাড়ঘেরা। এখানেই রয়েছে ঐতিহাসিক জাবালে রহমত—রহমতের পাহাড়। ১৪০০ বছর আগে এই স্থানেই হযরত মুহাম্মদ (সা.) প্রদান করেছিলেন তাঁর বিদায় হজের ঐতিহাসিক ভাষণ, যেখানে মানবতার সার্বিক কল্যাণের বাণী ছিল স্পষ্ট।
আজ হাজিরা দুপুরে জোহর ও আসরের নামাজ একসাথে আদায় করে মহান আল্লাহর দরবারে ক্ষমা প্রার্থনায় রত থাকবেন। আরাফাতের ময়দানেই মহানবী (সা.) বলেছেন: “হজ হচ্ছে আরাফাতে অবস্থান।” অর্থাৎ এই দিনটির গুরুত্ব ও মাহাত্ম্য অপরিসীম।
সৌদি আরবের পবিত্র মসজিদুল হারামের খতিব আজ আরাফাতের খুতবা প্রদান করছেন, যা এবার বাংলা ভাষাসহ ২০টি ভাষায় অনূদিত হয়ে বিশ্বব্যাপী সম্প্রচার হচ্ছে।
সূর্যাস্তের পর হাজিরা রওনা হবেন মুজদালিফার দিকে, যেখানে তাঁরা মাগরিব ও এশার নামাজ আদায় করে রাত যাপন করবেন খোলা আকাশের নিচে। পরদিন শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ, কোরবানি ও তাওয়াফের মধ্য দিয়ে হজের পরবর্তী গুরুত্বপূর্ণ আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হবে।
পবিত্র হজে অংশ নেওয়া প্রত্যেক মুসলিমের জন্য আজকের দিনটি গুনাহ মাফের, আত্মশুদ্ধির এবং জান্নাতের পথে অগ্রসরের দিন। ‘আরাফার দিন’কে হাদিসে বলা হয়েছে, সর্বাধিক মানুষকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেওয়ার দিন।