Dhaka 8:37 am, Wednesday, 25 June 2025
[gtranslate]

হালাল পদ্ধতিতে ও স্টানিং পদ্ধতিতে পশু যবেহ এর তাৎপর্য

মহান রাব্বুল আলামিন পবিত্র কুরআনুল কারীমে ঘোষণা করেন, فصل لربك وانحر অর্থাৎ – আপনি আপনার রবের নামে/জন্য সালাত আদায় করুন এবং কোরবানি করুন।

হযরত ইব্রাহিম (আঃ) ও হযরত ইসমাইল (আঃ) এর মাধ্যমে প্রবর্তিত মহান রবের নামে কুরবানী করা ওয়াজিব।
সে ক্ষেত্রে বৈধ পশু হালাল পদ্ধতিতে যবেহ করা বাঞ্চনিয়, অন্যথায় সেই যবেহকৃত পশুর গোস্ত হালাল ও স্বাস্থ্যসম্মত হবেনা। তাই যথাযথ প্রক্রিয়ায় পশু যাবে করলে সেটাই হবে ইসলাম ও বিজ্ঞানসম্মত। এ ব্যাপারে বিশদ তথ্যপূর্ণ একটি গবেষণা রয়েছে যে,

জার্মানির হ্যানোভার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক উইলহেল্ম শুলৎস (Wilhelm Schulze) এবং ডক্টর হাজিম (Dr. Hazim) ১৯৭৮ সালে একটি গবেষণা পরিচালনা করেন, যেখানে ইসলামিক পদ্ধতিতে পশু জবাই (হালাল) এবং পশ্চিমা পদ্ধতিতে স্টানিং (captive bolt stunning) এর মধ্যে পার্থক্য বিশ্লেষণ করা হয়। এই গবেষণায় তারা পশুর মস্তিষ্কের কার্যকলাপ (EEG) এবং হৃদস্পন্দন (ECG) পরিমাপ করে দেখেন যে হালাল পদ্ধতিতে জবাই করা পশু কম ব্যথা অনুভব করে এবং মাংস স্বাস্থ্যকর হয়।

🧪 গবেষণার মূল পদ্ধতি ও ফলাফল:

– ইলেকট্রোড স্থাপন: ১৭টি ভেড়া ও ১৫টি বাছুরের মাথায় সার্জারির মাধ্যমে ইলেকট্রোড স্থাপন করা হয়, যা মস্তিষ্কের কার্যকলাপ পরিমাপ করতে সাহায্য করে।

– জবাই পদ্ধতি :-

হালাল পদ্ধতি :
একটি ধারালো ছুরি দিয়ে দ্রুত ও গভীরভাবে গলা কেটে জগুলার শিরা, ক্যারোটিড ধমনী, শ্বাসনালী এবং খাদ্যনালী কাটা হয়।

– স্টানিং পদ্ধতি :-
এ পদ্ধতিতে পশুকে একটি ক্যাপটিভ বোল্ট পিস্তল দিয়ে অজ্ঞান করে তারপর জবাই করা হয়।

– ফলাফল:

– হালাল পদ্ধতি :-

জবাইয়ের প্রথম ৩ সেকেন্ডে EEG তে কোনো ব্যথার সংকেত দেখা যায়নি, যা নির্দেশ করে পশু ব্যথা অনুভব করেনি।
পরবর্তী ৩ সেকেন্ডে পশু গভীর ঘুমের অবস্থায় চলে যায়।
৬ সেকেন্ড পর EEG শূন্য দেখায়, অর্থাৎ পশু সম্পূর্ণ অচেতন হয়ে যায়।
এই সময়ে হৃদস্পন্দন চালু থাকে এবং শরীরের খিঁচুনি ঘটে, যা রক্ত সম্পূর্ণভাবে বের করে দেয়, ফলে মাংস স্বাস্থ্যকর হয়।

স্টানিং পদ্ধতি :-
EEG তে দেখা যায় যে স্টানিংয়ের পরপরই পশু তীব্র ব্যথা অনুভব করে।
হৃদস্পন্দন দ্রুত বন্ধ হয়ে যায়, ফলে শরীরে রক্ত জমে থাকে, যা মাংসের গুণমান হ্রাস করে।

এই গবেষণার মাধ্যমে প্রমাণিত হয় যে, সঠিকভাবে হালাল পদ্ধতিতে জবাই করা পশুর গোস্ত ইসলাম ও বিজ্ঞান মতে স্বাস্থ্যসম্মত।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

হালাল পদ্ধতিতে ও স্টানিং পদ্ধতিতে পশু যবেহ এর তাৎপর্য

Update Time : 07:36:05 pm, Friday, 6 June 2025

মহান রাব্বুল আলামিন পবিত্র কুরআনুল কারীমে ঘোষণা করেন, فصل لربك وانحر অর্থাৎ – আপনি আপনার রবের নামে/জন্য সালাত আদায় করুন এবং কোরবানি করুন।

হযরত ইব্রাহিম (আঃ) ও হযরত ইসমাইল (আঃ) এর মাধ্যমে প্রবর্তিত মহান রবের নামে কুরবানী করা ওয়াজিব।
সে ক্ষেত্রে বৈধ পশু হালাল পদ্ধতিতে যবেহ করা বাঞ্চনিয়, অন্যথায় সেই যবেহকৃত পশুর গোস্ত হালাল ও স্বাস্থ্যসম্মত হবেনা। তাই যথাযথ প্রক্রিয়ায় পশু যাবে করলে সেটাই হবে ইসলাম ও বিজ্ঞানসম্মত। এ ব্যাপারে বিশদ তথ্যপূর্ণ একটি গবেষণা রয়েছে যে,

জার্মানির হ্যানোভার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক উইলহেল্ম শুলৎস (Wilhelm Schulze) এবং ডক্টর হাজিম (Dr. Hazim) ১৯৭৮ সালে একটি গবেষণা পরিচালনা করেন, যেখানে ইসলামিক পদ্ধতিতে পশু জবাই (হালাল) এবং পশ্চিমা পদ্ধতিতে স্টানিং (captive bolt stunning) এর মধ্যে পার্থক্য বিশ্লেষণ করা হয়। এই গবেষণায় তারা পশুর মস্তিষ্কের কার্যকলাপ (EEG) এবং হৃদস্পন্দন (ECG) পরিমাপ করে দেখেন যে হালাল পদ্ধতিতে জবাই করা পশু কম ব্যথা অনুভব করে এবং মাংস স্বাস্থ্যকর হয়।

🧪 গবেষণার মূল পদ্ধতি ও ফলাফল:

– ইলেকট্রোড স্থাপন: ১৭টি ভেড়া ও ১৫টি বাছুরের মাথায় সার্জারির মাধ্যমে ইলেকট্রোড স্থাপন করা হয়, যা মস্তিষ্কের কার্যকলাপ পরিমাপ করতে সাহায্য করে।

– জবাই পদ্ধতি :-

হালাল পদ্ধতি :
একটি ধারালো ছুরি দিয়ে দ্রুত ও গভীরভাবে গলা কেটে জগুলার শিরা, ক্যারোটিড ধমনী, শ্বাসনালী এবং খাদ্যনালী কাটা হয়।

– স্টানিং পদ্ধতি :-
এ পদ্ধতিতে পশুকে একটি ক্যাপটিভ বোল্ট পিস্তল দিয়ে অজ্ঞান করে তারপর জবাই করা হয়।

– ফলাফল:

– হালাল পদ্ধতি :-

জবাইয়ের প্রথম ৩ সেকেন্ডে EEG তে কোনো ব্যথার সংকেত দেখা যায়নি, যা নির্দেশ করে পশু ব্যথা অনুভব করেনি।
পরবর্তী ৩ সেকেন্ডে পশু গভীর ঘুমের অবস্থায় চলে যায়।
৬ সেকেন্ড পর EEG শূন্য দেখায়, অর্থাৎ পশু সম্পূর্ণ অচেতন হয়ে যায়।
এই সময়ে হৃদস্পন্দন চালু থাকে এবং শরীরের খিঁচুনি ঘটে, যা রক্ত সম্পূর্ণভাবে বের করে দেয়, ফলে মাংস স্বাস্থ্যকর হয়।

স্টানিং পদ্ধতি :-
EEG তে দেখা যায় যে স্টানিংয়ের পরপরই পশু তীব্র ব্যথা অনুভব করে।
হৃদস্পন্দন দ্রুত বন্ধ হয়ে যায়, ফলে শরীরে রক্ত জমে থাকে, যা মাংসের গুণমান হ্রাস করে।

এই গবেষণার মাধ্যমে প্রমাণিত হয় যে, সঠিকভাবে হালাল পদ্ধতিতে জবাই করা পশুর গোস্ত ইসলাম ও বিজ্ঞান মতে স্বাস্থ্যসম্মত।