৩০ মে ২০২৫
নিজস্ব প্রতিবেদক
আজ ৩০ মে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাতবার্ষিকী। ১৯৮১ সালের এই দিনে রাতে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে একদল বিপথগামী সেনাসদস্যের হাতে নিহত হন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স ছিল মাত্র ৪৫ বছর। দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি দেশব্যাপী আট দিনব্যাপী কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
দলের প্রতিষ্ঠাতা ও স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমান ছিলেন একজন সাহসী সেনানায়ক, দৃঢ়চেতা রাষ্ট্রনায়ক এবং জাতির চরম সংকটে প্রেরণাদায়ী এক মহানায়ক। ১৯৭১ সালে চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে তার স্বাধীনতার ঘোষণা দেশবাসীকে সাহস জুগিয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য তিনি ‘বীর উত্তম’ খেতাবে ভূষিত হন।
জিয়াউর রহমানের রাজনৈতিক জীবনের শুরু ঘটে ১৯৭৫ সালের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের মধ্য দিয়ে। মাত্র ছয় বছরের শাসনামলে তিনি বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেন, রাষ্ট্রীয় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনেন এবং ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ অপবাদমুক্ত বাংলাদেশকে আত্মনির্ভরতার পথে এগিয়ে নিয়ে যান।
কর্মসূচির বিস্তারিত
বিএনপির উদ্যোগে শুরু হওয়া কর্মসূচি ২৬ মে থেকে চলবে আগামী ২ জুন পর্যন্ত। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে:
- শহীদ জিয়াউর রহমানের মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ
- আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল
- রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আলোচনা সভা
- দুস্থদের মাঝে চাল-ডাল, বস্ত্র ও খাবার বিতরণ
- সারা দেশের দলীয় কার্যালয়ে দলীয় পতাকা অর্ধনমিত ও কালো পতাকা উত্তোলন
- বিশেষ পোস্টার ও ক্রোড়পত্র প্রকাশ
আজ সকালে নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়সহ দেশব্যাপী দলীয় কার্যালয়ে পতাকা অর্ধনমিত করা হয়। পরে শেরেবাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে বিভিন্ন ওয়ার্ড ও থানায় চাল-ডাল ও বস্ত্র বিতরণ কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। পাশাপাশি জেলা, উপজেলা ও পৌর ইউনিটগুলোও নিজেদের এলাকায় আলোচনা সভা ও দান-খয়রাতের ব্যবস্থা করেছে।
মহাসচিবের বাণী
এই দিনে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক বাণীতে বলেন,
“জিয়াউর রহমান জাতির দুঃসময়ে দেশ ও জনগণের পক্ষ অবলম্বন করে অনন্য নেতৃত্ব দিয়েছেন। স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও উন্নয়নের ধারায় তার অবদান জাতি চিরদিন স্মরণ করবে। দেশবিরোধী চক্রান্তে তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হলেও তার আদর্শ ও স্বপ্ন আজো বেঁচে আছে মানুষের হৃদয়ে।”
শহীদ জিয়াউর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকী শুধু বিএনপি নয়, বাংলাদেশ রাজনৈতিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। তার অবদান জাতি আজ গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতায় স্মরণ করছে।